দেশে আবারো করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। এতে ট্রেন, বাস ও লঞ্চে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করার কথা বলা হয়েছে।
বিধিনিষেধ মেনে ট্রেনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত আজ বুধবার থেকে কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সে জন্য অনলাইনে টিকিট বিক্রির সফটওয়্যার আপডেট করছে সংস্থাটি। একই পথে হাঁটছেন বাস-মিনিবাস মালিকরাও।
এমন প্রেক্ষাপটে বেসরকারি পরিবহন মালিকরা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হলে ৫০-৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়াতে হবে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেন-দরবার করছেন তারা। বিষয়টি সামনে আসায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে।
তারা বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধির অজুহাতে কেরোসিন ও পেট্রলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয় গত নভেম্বরে। এর ফলে ২৮ শতাংশ বাসভাড়া বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক বাজারে ফের তেলের দাম কমলেও দেশে কমেনি তেলের দাম, ভাড়া কমায়নি পরিবহন মালিকরা।
এখন বিধিনিষেধের নামে ফের পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হলে করোনা মহামারির কারণে চাপে পড়া মানুষ আরো বিপাকে পড়েব। বিষয়টি বিবেচনায় নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন যাত্রীরা। তবে এখনো সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি না করলেও বুধবার বৈঠক ডেকেছে বিআরটিএ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নতুন সিদ্ধান্ত না এলে আগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভাড়া নেয়া হবে। অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়াবেন তারা।
নতুন নির্দেশনা এলে সেটি দেখে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের জন্য যৌক্তিকভাবে ভাড়া বাড়াতে হবে। অন্যথায় মালিকেরা তাদের গাড়ি চালাবেন কিনা, সেটি নিয়ে সংশয় রয়েছে।
নভেম্বরের আগে রাজধানীতে মিনিমাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা ভাড়া নেয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। তেলের দাম বাড়ানোর পর তা বেড়ে দুই টাকা ১৫ পয়সায় দাঁড়ায়। এখন সেটি ৩ টাকা ৪৪ পয়সায় নেয়ার কথা বলছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, অন্যান্য ছোট যানবাহন ও লঞ্চে একই হারে বাড়বে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাস ভাড়াবৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ থাকলেও ভর্তুকি বা ট্যাক্স মওকুফ করে ভাড়া না বাড়ানো উচিত। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে ভাড়া বাড়ানো হয়নি।
এর আগে সোমবার, ১০ জানুয়ারি, ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যা আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
বিধিনিষেধগুলোর মধ্যে রয়েছে- ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে হবে। এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সকল যানবাহনের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড-১৯ টিকার সনদধারী হতে হবে। যেসব যাত্রী বিদেশ থেকে আসবেন তাদের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে কোভিড-১৯ টিকার সনদ প্রদর্শন করতে হবে।
Leave a Reply